সাম্প্রতিক সময়ে ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের পুশ-ইনের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এই প্রক্রিয়ায়, বিএসএফ বাংলাদেশি নাগরিকদের সীমান্ত পার করে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও কূটনৈতিক নীতিমালার পরিপন্থী।
মহেশপুর সীমান্তে পুশ-ইন: সাম্প্রতিক ঘটনা
-
২৫ মে ২০২৫: ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তের কুসুমপুর ও বেনীপুর সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে বিএসএফ ৫৪ জনকে পুশ-ইন করে। তাদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশুরা রয়েছে। বিজিবি তাদের আটক করে এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও সহায়তা প্রদান করে।
-
৩০ মে ২০২৫: চুয়াডাঙ্গার জীবননগর সীমান্ত দিয়ে ১০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে পুশ-ইন করা হয়। আটক ব্যক্তিরা জানান, পাঁচ দিন আগে গুজরাট পুলিশ তাদের আটক করে। পরে ২৮ মে তাদের ট্রেনে করে কলকাতা নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ২৯ মে রাত ১১টার দিকে বাসে করে ভারতের নোনাগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্প এলাকায় এনে রাখা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে গুজরাট পুলিশ বিএসএফের উপস্থিতিতে সীমান্ত পিলার ৬১/৭-এস বরাবর গেট খুলে তাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। এরপর বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করেন। (Ajkerpatrika)
পুশ-ইনের প্রক্রিয়া ও প্রভাব
পুশ-ইন প্রক্রিয়ায়, বিএসএফ আটককৃত ব্যক্তিদের চোখ ও হাত বেঁধে সীমান্তে নিয়ে আসে এবং জোরপূর্বক বাংলাদেশে প্রবেশ করায়। এই প্রক্রিয়ায় নারী ও শিশুরাও বাদ যাচ্ছে না, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। বিজিবি এই ধরনের ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে এবং আটক ব্যক্তিদের প্রাথমিক সহায়তা প্রদান করছে।(banglanews24.com)
সার্বিক চিত্র
বিজিবি সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ৭ মে থেকে ৩০ মে ২০২৫ পর্যন্ত বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে মোট ১,০৫৩ জনকে বাংলাদেশে পুশ-ইন করা হয়েছে। এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে, যা সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা ও মানবিক সংকট সৃষ্টি করছে। (Facebook)
উপসংহার
মহেশপুরসহ অন্যান্য সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ কর্তৃক পুশ-ইনের ঘটনা আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের শামিল। এই বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের উচিত কূটনৈতিক পর্যায়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে এই ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধ করা এবং সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা। এছাড়া, পুশ-ইনের শিকার ব্যক্তিদের মানবিক সহায়তা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।
সম্পর্কিত ভিডিও প্রতিবেদন: