ঢাবি ছাত্র সাম্য হত্যা রহস্য উদঘাটন ‘রহস্য’ই রইল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন নিয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দাবি ও বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
🔍 তদন্ত ও গ্রেপ্তার
ডিএমপি জানিয়েছে, ১৩ মে রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছুরিকাঘাতে আহত হন সাম্য। রাত ১২টার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশের দাবি অনুযায়ী, এ ঘটনায় মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৮ জন ডিবির হাতে এবং ৩ জন থানা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে নাহিদ হাসান ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। রাব্বি ও মেহেদীর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোহাগ, হৃদয় ইসলাম ও রবিনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে, রিপন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন এবং সুজন সরকারকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে ।
❓ মোটিভ নিয়ে ধোঁয়াশা
ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ঘটনার মোটিভ উল্লেখ করেননি। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "মামলা তো ডিটেক্ট হয়েছে"। ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে এটি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এবং নেপথ্যের কারণ জানার চেষ্টা চলছে ।
🧩 ঘটনার বিবরণ
ডিবি কর্মকর্তার মতে, ঘটনার দিন সাম্য ও তার দুই বন্ধু মোটরসাইকেলে করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যান। সেখানে মেহেদীর গ্রুপের একজন রাব্বি, যার হাতে একটি ট্রেজার গান ছিল, সেটি শো করলে সাম্য জানতে চান সেটি কী। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয় এবং মাদক ব্যবসায়ীদের অন্যান্য সহযোগীরা ঘটনাস্থলে এসে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া করে। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে সাম্যকে ছুরিকাঘাত করা হয় ।
🧭 বিশ্ববিদ্যালয়ের পদক্ষেপ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সাম্য হত্যাকাণ্ডের তদন্তে একটি ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খানকে আহ্বায়ক করে এই কমিটি গঠন করা হয়। পরে ব্যারিস্টার নুরুল আজিমকে কমিটিতে কো-অপট করা হয় ।
🗣️ প্রতিবাদ ও দাবিসমূহ
সাম্য হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রদলসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে। তারা ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে ।
সারাংশ: পুলিশের দাবি অনুযায়ী মামলাটি ডিটেক্ট করা হয়েছে এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, ঘটনার মোটিভ স্পষ্ট না হওয়ায় এবং তদন্তে ধোঁয়াশা থাকায়, হত্যাকাণ্ডের রহস্য এখনো পুরোপুরি উদঘাটিত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্র সংগঠনগুলো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়ে আসছে।