ইরানে বন্দরে বিস্ফোরণ: 25 জন নিহত
ইরানের বন্দর আব্বাসে শাহিদ রাজাই বন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণ: অন্তত ২৫ জন নিহত, আহত ৮০০+
২০২৫ সালের ২৬ এপ্রিল, শনিবার, ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের বন্দর আব্বাসে অবস্থিত শাহিদ রাজাই বন্দরে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ২৫ জন নিহত এবং ৮০০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় দুপুর ১২:২০ মিনিটে এই বিস্ফোরণ ঘটে, যা বন্দরের সিনা কনটেইনার ইয়ার্ডে রক্ষিত কয়েকটি কনটেইনার থেকে উদ্ভূত হয়। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই কনটেইনারগুলিতে সম্ভবত সোডিয়াম পারক্লোরেটসহ অন্যান্য বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থ ছিল, যা ক্ষেপণাস্ত্র জ্বালানী তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ।
🔥 বিস্ফোরণের প্রভাব
বিস্ফোরণের ফলে একটি বিশাল অগ্নিকাণ্ড ঘটে এবং কালো ধোঁয়ার মেঘ কয়েক কিলোমিটার দূর থেকে দেখা যায়। শকওয়েভের কারণে আশেপাশের ভবনের জানালা ভেঙে যায় এবং অন্তত একটি ভবন ধসে পড়ে। বিস্ফোরণের শব্দ প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত কেশম দ্বীপেও শোনা গেছে ।
🏥 হতাহত ও উদ্ধার কার্যক্রম
এই দুর্ঘটনায় অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন এবং ৮০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। ছয়জন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। ইরানি রেড ক্রিসেন্ট এবং অন্যান্য জরুরি সেবা সংস্থা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতাল এবং শিরাজ শহরের চিকিৎসা কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে। অগ্নি নির্বাপণে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে, এবং আগুন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগেছে ।
🧪 বিস্ফোরণের কারণ ও তদন্ত
ইরানি কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে মনে করছে, দাহ্য পদার্থের অবহেলাজনিত সংরক্ষণ এই বিস্ফোরণের কারণ হতে পারে। তবে, সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। কিছু সূত্র জানিয়েছে, বন্দরে রক্ষিত ক্ষেপণাস্ত্র জ্বালানীর উপাদান সোডিয়াম পারক্লোরেটের অপ্রতুল ব্যবস্থাপনা এই দুর্ঘটনার জন্য দায়ী হতে পারে ।
⚠️ পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগত সতর্কতা
বিস্ফোরণের ফলে বাতাসে অ্যামোনিয়া, সালফার ডাইঅক্সাইড এবং নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইডের মতো বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়েছে। এ কারণে স্থানীয় স্কুল ও অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, এবং বাসিন্দাদের ঘরে থাকার ও মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ।
📉 অর্থনৈতিক প্রভাব
শাহিদ রাজাই বন্দর ইরানের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক বন্দর, যা বছরে প্রায় ৮০ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহন করে। এই বিস্ফোরণের ফলে বন্দরের সকল আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে, যা ইরানের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে ।