হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ

 হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ




২০২৫ সালের ৩ মে, শনিবার, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি বিশাল মহাসমাবেশ আয়োজন করে। এই সমাবেশে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত প্রায় ২০,০০০ সমর্থক অংশগ্রহণ করেন, যা ২০১৩ সালের শাপলা চত্বরে সংঘটিত সমাবেশের পর সংগঠনটির অন্যতম বৃহৎ জনসমাগম হিসেবে বিবেচিত হয়েছে ।   

📌 প্রধান দাবিসমূহ

সমাবেশে হেফাজত একটি ১২-দফা দাবি পেশ করে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল:

  1. নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল: এই কমিশনের প্রতিবেদনকে ইসলামবিরোধী আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি জানানো হয়।

  2. সংবিধানে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা পুনঃস্থাপন: "বহুত্ববাদ" পরিহার করে সংবিধানে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস পুনঃস্থাপনের আহ্বান জানানো হয়।

  3. ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর ঘটনার বিচার: শেখ হাসিনার শাসনামলে সংগঠিত শাপলা চত্বর ঘটনার বিচার এবং হেফাজতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবি তোলা হয়।

  4. আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ: আওয়ামী লীগকে "সন্ত্রাসী" সংগঠন আখ্যা দিয়ে তার রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়।

  5. ধর্ম অবমাননার বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন: আল্লাহ ও নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর বিরুদ্ধে কটূক্তি রোধে কঠোর আইন প্রণয়নের আহ্বান জানানো হয়।

  6. আন্তর্জাতিক ইস্যুতে অবস্থান: ফিলিস্তিন ও ভারতের মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান গ্রহণ এবং ইসরায়েলি ও ভারতীয় পণ্যের বয়কটের আহ্বান জানানো হয়।

  7. রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোরের বিরোধিতা: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডোর স্থাপনের সিদ্ধান্তকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি তোলা হয়।

  8. আহমদিয়া সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা: আহমদিয়া সম্প্রদায়কে অমুসলিম ঘোষণা করে তাদের ধর্মীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়।

🗓️ ভবিষ্যৎ কর্মসূচি   

সমাবেশে হেফাজতের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয় যে:

  • ২৩ মে: সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।

  • পরবর্তী তিন মাস: নারীদের অধিকার সংক্রান্ত দাবিতে বিভাগীয় পর্যায়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

⚠️ বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া

সমাবেশ চলাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় একটি নারী প্রতিকৃতিতে জুতা নিক্ষেপ ও শাড়ি অপসারণের ঘটনা ঘটে, যা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়। হেফাজত এই ঘটনার সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সমাবেশের মাধ্যমে হেফাজত তাদের রাজনৈতিক প্রভাব প্রদর্শন করেছে এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করার চেষ্টা করছে।



Post a Comment

Previous Post Next Post